'তুমি আমার প্রথম সকাল,
সারাটি বিকেল... একাকী দুপুর বেলা...
তুমি আমার সারা দিনময়...'
আজ সারাদিন গুন গুন করে গেয়েই যাচ্ছে আনুভা। যেন অন্য রকম এক ভালো লাগা তাকে সারাক্ষনই ঘিরে রেখেছে। ভেবে পাচ্ছেনা কেন তার এমন
অনুভূতি হচ্ছে। কেন আজ সব কিছুই অসম্ভব ভালো লাগছে !
রুমের ছোট্ট জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই আচমকা রুপমের কথা মনে পড়ে যায়। ছেলেটির সেই বোকা বোকা ভাব... আমতা আমতা করে কথা বলার ধরন... আর পা দিয়ে বোতলটা লাথি দিয়ে সরানোটা যেন ভুলতেই পারছেনা।
রুপমের কথা মনে পরতেই দৌড় দিয়ে ফোনটা হাতে নেয়।
-জানিস আজ কি হয়েছে? ঐ যে সেই বিখ্যাত ফটোগ্রাফারটা আছে না... যার ছবি বেশ অনেকবার এক্সিবিশনে গেছে।রুপম... রপম শাহরিয়ার...
অনর্গল বলেই যাচ্ছে আনুভা...
-আরে চিনেছি তো। কি হয়েছে তাই বল ?
-আজ না দৃক থেকে বেরিয়ে আসার পর সে আমার ফেলে দেয়া টিস্যু উঠিয়ে এনে ডাস্টবিনে ফেলার জন্য জ্ঞান দিয়েছিলো... দেখ কি বোকা মানুষটা... হাসতে থাকে সে... ফ্রেন্ডকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আবারও বলা শুরু করে আনুভা...
রাত ১টা বাজে।
সেই ছোট্ট জানালায় গালে হাত দিয়ে বসে থাকে আনুভা। তার খুব ইচ্ছা হচ্ছে রুপমের সাথে অনেক অনেক কথা বলতে। এক দেখায়তেই কেন এতটা ভালো লেগে গেছে সেটা আনুভা কিছুতেই বুঝতে পারছেনা। নাহ ছেলেটার মাঝে এক ধরনের সরলতা আছে । তা না হলে কেও এভাবে বাসা পর্যন্ত চলে আসে... !!
নির্ঘুম চোখে এমন অজস্র ভাবনা ভাবতে থাকে সে।
*****
-শোন আজ না দৃকে গিয়েছিলাম । বেশ সুন্দর কিছু ছবি গ্যালারীতে এসেছে ।
-তাই নাকি? দৃকের কথা শুনে চমকে উঠলেও ভাবলেশহীন ভাবে মুনিয়ার কথার প্রতিউত্তরে মাথা নাড়ে অনুভা।
- ও জানিস তোর সেই বিখ্যাত ফটোগ্রাফার রুপমও কিন্তু ছিলো ওখানে। আনুভাকে ছোট একটা খোচা মেরে কথাটা বলে মুনিয়া।
-তো... তো কি হয়েছে?
মুনিয়ার মুখে 'তোর রুপম' কথাটা শুনে একটা খুশির বাতাস বয়ে গেলেও পরক্ষনেই আবার মন খারাপ হয়ে যায়। এতটা দিন হয়ে গেল একটা বারের জন্যও দেখা হয়নি। প্রতি দিন কম করে হলেও লক্ষবার সেই জানালায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিলো এক নজর দেখবে বলে। কিন্তু আসেনি... আসবেই বা কেন... বিখ্যাত ফটোগ্রাফার বলে কথা। কোন দুঃখে সে আসবে?কিসের আশাতেই বা আসবে? চাপা অভিমানগুলোকে দমিয়ে রেখে এভাবেই নিজেকে নিজে সান্তনা দেয় আনুভা।
-আচ্ছা তুই এমন কেন বল তো?
-কেমন ?
-এই যুগে কেও ছবি তুলছে, কেও মডেল হচ্ছে, কেও উঁচুমানের ছবি তুলে নাম কামাচ্ছে আর কেও বা সেগুলো মুগ্ধ হয়ে দেখছে...
আর তুই কিনা এসবের একটার মধ্যেও পরিসনা... আজব !!
-ধুর এসবে আমার কোন আগ্রহ নাই। আর এগুলো আমার কিচ্ছুই ভালো লাগেনা। আচ্ছা যাই গা রে। আজ তাড়া আছে, বলে বাসার উদ্দেশ্যে হাটা শুরু করে অনুভা।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা...
ফ্রেন্ডের কাছে তাড়া আছে বললেও আসলে তার কোন তাড়া ছিলনা। আর কেনইবা এমন করলো তাও জানেনা। বাসায় যাবে বলে ভার্সিটি থেকে বের হলেও কেন জানি এখন আর অনুভার বাসায় যেতে ইচ্ছে করছেনা। চুপচাপ হাটা শুরু করে সে।
হঠাত আনুভার মনে হল কোন কারন ছাড়াই তার মন ভীষন রকমের খারাপ। এই ব্যাপারটা তার সাথে প্রায়ই ঘটে। কোন কথা নেই বার্তা নেই হুট করেই মন খারাপ হয়ে যায়। খারাপ মানে সেই রকম খারাপ হয়। ব্যাপারটা নিয়ে সে নিজেও খুব চিন্তিত।আর যখনই কোন কারনে মন খারাপ হয়ে যায় সোজা একটা রিক্সা নিয়ে আনুভা অজানা পথে যেতে থাকে। ঘুরতে ঘুরতে বেশ অনেক সময় পার একটা পর্যায়ে সবকিছুই ঠিক হয়ে যায়।
আজও সে ভাবনাহীনাহীন ভাবে রিক্সার হুড তুলে দিয়ে অজানা পথে যেতে থাকে।কানে হ্যাডফোন আর দৃষ্টি রিক্সার চাকার দিকে। ভাবনাতে অনেক কিছু।
-হ্যাই আনুভা
আচমকা নিজের নাম শুনে চমকে গিয়ে রিক্সা থেকে পেছনে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়।
-আরে রুপম ভাই যে... !!
-এদিকে কই যাচ্ছেন?
-এইতো একটা কাজ ছিলো। ওয়েট রিক্সা ছেড়ে দিচ্ছি।
রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে একসাথে হাটা শুরু করে তারা...
-তো এদিকে কি প্রায়ই আসা হয়? কোন কথা না পেয়ে এমন একটা ফালতু প্রশ্ন করায় মনে মনে নিজেরে লক্ষটা গাল দিতে থাকে রুপম।
- নাহ। ছোট্ট করেই উত্তর দেয় আনুভা
দুটো কথা বলার পরই যেন কথার ঝুরি ফুরিয়ে যায়।
-বাই দ্যা ওয়ে কোথায় থাকেন আপনি?
প্রশ্নটা করার পর বুঝতে পারে আবারও যে গাধামী করে ফেলেছে। আনুভা কই থাকে এইটা তো জানেই। ধুর তুই একটা গাধা... আস্ত একটা গবেট। রাগে কট মট করতে থাকে।
-আমি কই থাকি আপনি জানেন না বুঝি? মুচকী হেসে প্রশ্নের জবাবে প্রশ্ন করে আনুভা।
-ও হ্যা জানি তো।
অবাক আর বিস্ময় নিয়ে আনুভার দিকে তাকিয়ে থাকে রুপম। এত সুন্দর করে কেও বুঝি হাসতে পারে? কেমন করেই বা পারে? এই হাসির মাঝে যেন রাজ্যের মায়া ... কি নিষ্পাপ একটা ভাব। সে খেয়াল করলো অনুভা হাসলে তার ডান গালটায় খুব সুন্দর একটা টোল পড়ে। মনে মনে রুপম বলতে থাকে- 'মেয়ে তোমাকে আমার এই ছোট্ট জীবনে পাই বা না পাই ,ঠিক এই মুহুর্ত থেকে তোমাকে তোমার অনুমতি ছাড়াই ভালোবাসে ফেললাম...'
-ফুচকা খাবেন ?
আনুভার কথায় কল্পনার জগত থেকে বেরিয়ে আসে রুপন।
- ফুচকা? আইডিয়া।
-মানে কি? কিসের আইডিয়া?
-একটা চ্যালেঞ্জ লাগবেন? আরে আমি প্রশ্ন করছি কেন ? লাগতেই হবে। বলেন লাগবেন?
রুপমের জোরাজুরিতে রাজি হয় ।
-কে কত প্লেট ফুচকা খেতে পারে দেখবো। আপনি জিতলে যা বলেন মেনে নেবো আর আমি জিতলে আপনাকে আমার প্রতিটা ছবি প্রদর্শনীতে আসতে হবে।
-ব্যাস এটুকুই?
-হুম হুম...
-ওকে বাদ্দেন । আমি না হয় আসবো। আপনার এই চ্যালেঞ্জ লেগে আমি অসুস্থ হতে চাইনা।
-সত্যি???
-হুম সত্যি...
আবারও সেই মুগ্ধ হয়ে যাওয়া হাসি হেসে উত্তর দেয়।
রুপম বুঝতে পারেনা কেন সে হুট করেই ওমন অযৌক্তিক একটা চ্যালেঞ্জ করে বসে। আর কেনইবা সে আনুভাকে তার প্রতিটা ছবিতে আমন্ত্রন করে। কেন তার চিন্তার অনেক বড় একটা অংশ আনুভাকে নিয়েই ঘিরে থাকে।
আর আনুভাও বুঝতে পারেনা রুপমের সেই আবদারটা কোন প্রশ্ন ছাড়া কেনই বা এত সহজে মেনে নিয়েছে। কেনই বা সেইদিন মন খারাপের সন্ধ্যায় রুপমকে দেখেই ভালো লাগায় ভরে উঠে। কেনই বা রুপমের ফোন কল দেখলে সব কিছু ফেলে তার সাথে কথার ভুবনে হারাতে ইচ্ছে হয়।
এভাবে বেশ কয়েক মাস কেটে যায়..
********
একদিন...
- আনুভা ... আনুভা আজকের পত্রিকা পড়েছিস? দৌড়ে এসে মুনিয়া হাপাতে হাপাতে কথাটা জানতে চায়।
-নাহ পড়িনি এখনও... কেন কি হয়েছে ? কোন কিছু কি ঘটেছে?
-ঘটেছে মানে? কোন কিছুই বাদ যায় নি। নেহ এইটা পড়...
পত্রিকা হাতে নিয়ে নিউজটায় চোখ বুলাতেই থমকে যায় আনুভা...একেবারে পাথর হয়ে যায় সে... নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারেনা...এটা হতে পারে না...কোনভাবেই না.....!!
নিজের অজান্তেই গাল বেয়ে টুপ টুপ করে অশ্রুজল গড়িয়ে পড়ে.. !!
লিখেছেনঃ Salma Ahmed
সারাটি বিকেল... একাকী দুপুর বেলা...
তুমি আমার সারা দিনময়...'
আজ সারাদিন গুন গুন করে গেয়েই যাচ্ছে আনুভা। যেন অন্য রকম এক ভালো লাগা তাকে সারাক্ষনই ঘিরে রেখেছে। ভেবে পাচ্ছেনা কেন তার এমন
অনুভূতি হচ্ছে। কেন আজ সব কিছুই অসম্ভব ভালো লাগছে !
রুমের ছোট্ট জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই আচমকা রুপমের কথা মনে পড়ে যায়। ছেলেটির সেই বোকা বোকা ভাব... আমতা আমতা করে কথা বলার ধরন... আর পা দিয়ে বোতলটা লাথি দিয়ে সরানোটা যেন ভুলতেই পারছেনা।
রুপমের কথা মনে পরতেই দৌড় দিয়ে ফোনটা হাতে নেয়।
-জানিস আজ কি হয়েছে? ঐ যে সেই বিখ্যাত ফটোগ্রাফারটা আছে না... যার ছবি বেশ অনেকবার এক্সিবিশনে গেছে।রুপম... রপম শাহরিয়ার...
অনর্গল বলেই যাচ্ছে আনুভা...
-আরে চিনেছি তো। কি হয়েছে তাই বল ?
-আজ না দৃক থেকে বেরিয়ে আসার পর সে আমার ফেলে দেয়া টিস্যু উঠিয়ে এনে ডাস্টবিনে ফেলার জন্য জ্ঞান দিয়েছিলো... দেখ কি বোকা মানুষটা... হাসতে থাকে সে... ফ্রেন্ডকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আবারও বলা শুরু করে আনুভা...
রাত ১টা বাজে।
সেই ছোট্ট জানালায় গালে হাত দিয়ে বসে থাকে আনুভা। তার খুব ইচ্ছা হচ্ছে রুপমের সাথে অনেক অনেক কথা বলতে। এক দেখায়তেই কেন এতটা ভালো লেগে গেছে সেটা আনুভা কিছুতেই বুঝতে পারছেনা। নাহ ছেলেটার মাঝে এক ধরনের সরলতা আছে । তা না হলে কেও এভাবে বাসা পর্যন্ত চলে আসে... !!
নির্ঘুম চোখে এমন অজস্র ভাবনা ভাবতে থাকে সে।
*****
-শোন আজ না দৃকে গিয়েছিলাম । বেশ সুন্দর কিছু ছবি গ্যালারীতে এসেছে ।
-তাই নাকি? দৃকের কথা শুনে চমকে উঠলেও ভাবলেশহীন ভাবে মুনিয়ার কথার প্রতিউত্তরে মাথা নাড়ে অনুভা।
- ও জানিস তোর সেই বিখ্যাত ফটোগ্রাফার রুপমও কিন্তু ছিলো ওখানে। আনুভাকে ছোট একটা খোচা মেরে কথাটা বলে মুনিয়া।
-তো... তো কি হয়েছে?
মুনিয়ার মুখে 'তোর রুপম' কথাটা শুনে একটা খুশির বাতাস বয়ে গেলেও পরক্ষনেই আবার মন খারাপ হয়ে যায়। এতটা দিন হয়ে গেল একটা বারের জন্যও দেখা হয়নি। প্রতি দিন কম করে হলেও লক্ষবার সেই জানালায় গিয়ে দাঁড়িয়েছিলো এক নজর দেখবে বলে। কিন্তু আসেনি... আসবেই বা কেন... বিখ্যাত ফটোগ্রাফার বলে কথা। কোন দুঃখে সে আসবে?কিসের আশাতেই বা আসবে? চাপা অভিমানগুলোকে দমিয়ে রেখে এভাবেই নিজেকে নিজে সান্তনা দেয় আনুভা।
-আচ্ছা তুই এমন কেন বল তো?
-কেমন ?
-এই যুগে কেও ছবি তুলছে, কেও মডেল হচ্ছে, কেও উঁচুমানের ছবি তুলে নাম কামাচ্ছে আর কেও বা সেগুলো মুগ্ধ হয়ে দেখছে...
আর তুই কিনা এসবের একটার মধ্যেও পরিসনা... আজব !!
-ধুর এসবে আমার কোন আগ্রহ নাই। আর এগুলো আমার কিচ্ছুই ভালো লাগেনা। আচ্ছা যাই গা রে। আজ তাড়া আছে, বলে বাসার উদ্দেশ্যে হাটা শুরু করে অনুভা।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা...
ফ্রেন্ডের কাছে তাড়া আছে বললেও আসলে তার কোন তাড়া ছিলনা। আর কেনইবা এমন করলো তাও জানেনা। বাসায় যাবে বলে ভার্সিটি থেকে বের হলেও কেন জানি এখন আর অনুভার বাসায় যেতে ইচ্ছে করছেনা। চুপচাপ হাটা শুরু করে সে।
হঠাত আনুভার মনে হল কোন কারন ছাড়াই তার মন ভীষন রকমের খারাপ। এই ব্যাপারটা তার সাথে প্রায়ই ঘটে। কোন কথা নেই বার্তা নেই হুট করেই মন খারাপ হয়ে যায়। খারাপ মানে সেই রকম খারাপ হয়। ব্যাপারটা নিয়ে সে নিজেও খুব চিন্তিত।আর যখনই কোন কারনে মন খারাপ হয়ে যায় সোজা একটা রিক্সা নিয়ে আনুভা অজানা পথে যেতে থাকে। ঘুরতে ঘুরতে বেশ অনেক সময় পার একটা পর্যায়ে সবকিছুই ঠিক হয়ে যায়।
আজও সে ভাবনাহীনাহীন ভাবে রিক্সার হুড তুলে দিয়ে অজানা পথে যেতে থাকে।কানে হ্যাডফোন আর দৃষ্টি রিক্সার চাকার দিকে। ভাবনাতে অনেক কিছু।
-হ্যাই আনুভা
আচমকা নিজের নাম শুনে চমকে গিয়ে রিক্সা থেকে পেছনে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়।
-আরে রুপম ভাই যে... !!
-এদিকে কই যাচ্ছেন?
-এইতো একটা কাজ ছিলো। ওয়েট রিক্সা ছেড়ে দিচ্ছি।
রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে একসাথে হাটা শুরু করে তারা...
-তো এদিকে কি প্রায়ই আসা হয়? কোন কথা না পেয়ে এমন একটা ফালতু প্রশ্ন করায় মনে মনে নিজেরে লক্ষটা গাল দিতে থাকে রুপম।
- নাহ। ছোট্ট করেই উত্তর দেয় আনুভা
দুটো কথা বলার পরই যেন কথার ঝুরি ফুরিয়ে যায়।
-বাই দ্যা ওয়ে কোথায় থাকেন আপনি?
প্রশ্নটা করার পর বুঝতে পারে আবারও যে গাধামী করে ফেলেছে। আনুভা কই থাকে এইটা তো জানেই। ধুর তুই একটা গাধা... আস্ত একটা গবেট। রাগে কট মট করতে থাকে।
-আমি কই থাকি আপনি জানেন না বুঝি? মুচকী হেসে প্রশ্নের জবাবে প্রশ্ন করে আনুভা।
-ও হ্যা জানি তো।
অবাক আর বিস্ময় নিয়ে আনুভার দিকে তাকিয়ে থাকে রুপম। এত সুন্দর করে কেও বুঝি হাসতে পারে? কেমন করেই বা পারে? এই হাসির মাঝে যেন রাজ্যের মায়া ... কি নিষ্পাপ একটা ভাব। সে খেয়াল করলো অনুভা হাসলে তার ডান গালটায় খুব সুন্দর একটা টোল পড়ে। মনে মনে রুপম বলতে থাকে- 'মেয়ে তোমাকে আমার এই ছোট্ট জীবনে পাই বা না পাই ,ঠিক এই মুহুর্ত থেকে তোমাকে তোমার অনুমতি ছাড়াই ভালোবাসে ফেললাম...'
-ফুচকা খাবেন ?
আনুভার কথায় কল্পনার জগত থেকে বেরিয়ে আসে রুপন।
- ফুচকা? আইডিয়া।
-মানে কি? কিসের আইডিয়া?
-একটা চ্যালেঞ্জ লাগবেন? আরে আমি প্রশ্ন করছি কেন ? লাগতেই হবে। বলেন লাগবেন?
রুপমের জোরাজুরিতে রাজি হয় ।
-কে কত প্লেট ফুচকা খেতে পারে দেখবো। আপনি জিতলে যা বলেন মেনে নেবো আর আমি জিতলে আপনাকে আমার প্রতিটা ছবি প্রদর্শনীতে আসতে হবে।
-ব্যাস এটুকুই?
-হুম হুম...
-ওকে বাদ্দেন । আমি না হয় আসবো। আপনার এই চ্যালেঞ্জ লেগে আমি অসুস্থ হতে চাইনা।
-সত্যি???
-হুম সত্যি...
আবারও সেই মুগ্ধ হয়ে যাওয়া হাসি হেসে উত্তর দেয়।
রুপম বুঝতে পারেনা কেন সে হুট করেই ওমন অযৌক্তিক একটা চ্যালেঞ্জ করে বসে। আর কেনইবা সে আনুভাকে তার প্রতিটা ছবিতে আমন্ত্রন করে। কেন তার চিন্তার অনেক বড় একটা অংশ আনুভাকে নিয়েই ঘিরে থাকে।
আর আনুভাও বুঝতে পারেনা রুপমের সেই আবদারটা কোন প্রশ্ন ছাড়া কেনই বা এত সহজে মেনে নিয়েছে। কেনই বা সেইদিন মন খারাপের সন্ধ্যায় রুপমকে দেখেই ভালো লাগায় ভরে উঠে। কেনই বা রুপমের ফোন কল দেখলে সব কিছু ফেলে তার সাথে কথার ভুবনে হারাতে ইচ্ছে হয়।
এভাবে বেশ কয়েক মাস কেটে যায়..
********
একদিন...
- আনুভা ... আনুভা আজকের পত্রিকা পড়েছিস? দৌড়ে এসে মুনিয়া হাপাতে হাপাতে কথাটা জানতে চায়।
-নাহ পড়িনি এখনও... কেন কি হয়েছে ? কোন কিছু কি ঘটেছে?
-ঘটেছে মানে? কোন কিছুই বাদ যায় নি। নেহ এইটা পড়...
পত্রিকা হাতে নিয়ে নিউজটায় চোখ বুলাতেই থমকে যায় আনুভা...একেবারে পাথর হয়ে যায় সে... নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারেনা...এটা হতে পারে না...কোনভাবেই না.....!!
নিজের অজান্তেই গাল বেয়ে টুপ টুপ করে অশ্রুজল গড়িয়ে পড়ে.. !!
লিখেছেনঃ Salma Ahmed
No comments:
Post a Comment