চিঠিটা তোমাকে দেয়ার ব্যাপারে এতদিন মনের সাথে অনেক বোঝাপড়া করেছি।একবার মনে হয়েছে চিঠি একথাগুলো তোমার জানা দরকার। আবার এটাও মনে হয়েছে আমি যে আবেগ , যে ভালবাসা নিয়ে একথা গুলো লিখছি তুমি কি সেইরকম আবেগ কিংবা ভালবাসা দিয়ে আমার কথাগুলোর মূল্যায়ন করবে?কিন্তু চিঠিটা তোমাকে লেখার ব্যাপারে যত যুক্তিই দাঁড় করাই না কেন,আমার আবেগের কাছে সব যুক্তিই হাওয়া।আমি তোমাকে অনেকগুলো কথা জানাবো বলেই লিখছি।
হয়ত আর লেখা হবে না।ইচ্ছে হলেও লিখব না।মনকে এতদিন সেভাবে তৈরী করেই লিখতে বসেছি।আমি কখনো কাউকে ভালবাসবো ভাবি নি।কিন্তু কখন কিভাবে যে তুমি আমার পুরো মন দখল করে ফেলেছো টেরই পাই নি।তখন মনে হত ভালবাসা ছাড়া বুঝি জীবনের কোন আনন্দই নেই।আমি খুব সাধারন ছেলে হলেও সাধারন কোন কিছুই আমার পছন্দ নয়।আমার এই চরিত্রের জন্য কখনো আনন্দ আবার কখনো কষ্ট পাই।
তোমার সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারটা যখন জানাজানি হয়ে গেল,তখন সবাই বলেছিল এটা তোমার প্রতিশোধ নেয়ার একটা ব্যবস্হা।আমি বিশ্বাস করিনি।তবুও মনে হয়েছে সত্যিই যদি তাই হয় তবে তুমি সম্পূর্ন সফল।কারন ততদিনে তোমার প্রতি খুব দূর্বল হয়ে পড়েছি।তোমার প্রতি এই দূর্বলতা লক্ষ্য করে আমার নিজেরই অবাক লাগত।যাদের কাছে,যাদের আদর যত্নে এতটা বড় হয়েছি,শুধু একজনের কারনে কি অবলীলায় তাদের তুচ্ছ করা যায়!মাঝে মাঝে মনে হয় আমি যদি বর্তমানের অভিঙ্গতা,বুদ্ধি,বিবেচনা নিয়ে পুরোনো দিনগুলো ফিরে পাই তাহলে কি তোমার ব্যাপারে আবার এরকম কোন ভুল করব?আমার কি মনে হয় জানো?আমি জেনেশুনে আবার সেই ভুল করব।
আগেও বলেছি ব্যতিক্রম কিছু পছন্দ করি।আমি জানি মনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কটা অবিচ্ছেদ্য।এটা আমার ভালো লাগে না।ব্যাপারটা সাধারন বলেই ভালো লাগে না।সব সময় তোমাকে অন্য ছেলেদের চেয়ে ব্যতিক্রম ভেবেছি।এই ভাবনা আমাকে আনন্দ দিয়েছে,অহঙ্কারী করেছে।কিন্তু সেই অহংকার বেশিদিন স্থায়ী হল না।যেদিন তোমার সম্পর্কে জানলাম,বিশ্বাস কর সেদিন আমার একটুও রাগ হয় নি।কিন্তু এই যে এই সামান্য কথাটা আমার এতদিনের অহংকার কে ভেঙে এক নিমিষে তোমাকে আর দশটা সাধারন ছেলেদের সাড়িতে দাঁড় করিয়ে দিল।এটাই আমাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিল।তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক যতটুকু তার চেয়ে বেশি প্রভাব তুমি আমার মনের উপর ফেলেছো।জানিনা এটা আমি কতদিনে কিভাবে কাটিয়ে উঠতে পারব।
তুমি রাজনীতি কর বলে রাজনীতি করে এমন যেকোন ছেলেকে আমার ভালো লাগে।তাদেরকে দিয়ে তোমাকে জানার চেষ্টা করি।কোন এক জোত্স্না রাতে তোমার হাত ধরে হেটেছিলাম।মনে আছে?সেই থেকে জোত্স্না রাত এলেই একটা হাতের শূন্যতা আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।বাসায় সবার মাঝে থেকেও আমাকে তুমি কতটা একা আর নিঃসঙ্গ করে রাখো তার কোন খবরই তুমি রাখো নি।তোমাকে এত কথা লেখার কারন হল তোমাকে নিয়ে আমার স্বপ্নের কথা, কষ্টের কথা কাউকে বলতে ইচ্ছে করে না।কেননা তোমার সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে কারোই আন্তরিক সমর্থন পাই নি।
শুধু নিজের জিদকে সম্বল করেই এতদূর এগিয়েছি।তুমি এটার কোন মূল্যই দিলে না ।একটা ব্যাপার লক্ষ্য করে দেখেছি, তোমার খুব কাছে যেতেও ইচ্ছে করে না আবার তোমার কাছ থেকে দূরেও যেতে ইচ্ছে করে না।আগে মনে হত তোমার সাথে যদি বিয়ে না ই হবে তাহলে হয় তুমি মরে যাও নাহয় আমি।আমি এটা কখনোই মানতে পারি না অন্য একটা মেয়ে তোমার বউ হবে।যেই হাত তুমি আমার হাতের উপর রেখেছো সেই হাত চিরদিনের জন্য অন্যের হাতে রাখবে।সময়ের ব্যবধানে হয়ত একদিন তাই হবে ।কিন্তু সেই দৃশ্য যেন আমাকে না দেখতে হয়।তোমাকে ভুলতে পারব না জানি ।ভুলতে চাইও না আর এটাও চাই না কারনে অকারনে তোমার কথা মনে আসুক, স্মৃতিগুলো ভাবতে গিয়ে চোখ দুটো জলে ভিজে উঠুক ।মাঝে মাঝে মনে হয় ভালবাসা কি কষ্ট ছাড়া আর কিছুই দিতে জানে না?
তোমাকে ভালবাসা আমার জীবনের চরম ভুল এটা কখনোই বলবনা ।কারন আমি সবসময়েই ব্যতিক্রম পছন্দ করি। আর তুমি হচ্ছো আমার জীবনের সেই সুন্দর ব্যতিক্রম ।আচ্ছা, আমার কথা কি তোমার মনে পড়ে! অলস দুপুরে কিংবা কোন কষ্ট বা আনন্দের মূহুর্তে ?তোমাকে এখনো জানতেই পারলাম না ।আচ্ছা ,একটা মানুষের মন কি করে এত র্দূবোধ্য হয়? তোমার সাথে আবার আগের সম্পর্কে ফিরে যাওয়া যাবে না জানি, তবুও বলছি তোমাকে ভীষন মিস করি। এখনো জোত্স্না রাত আমাকে নিঃস্ব করে ।খুব ইচ্ছে করে আর একবার তোমাকে খুব কাছে থেকে দেখি ।আমার ভিতরে ধীরে ধীরে ভালবাসার যে সৌধ আমি গড়েছি সামান্য অবহেলা দিয়ে তা ভেঙে ফেলার কোন ক্ষমতায় তোমার নেই ।তোমাকে ফিরিয়ে আনবো তা ভেবোনা, কারন যে চলে যেতে চায় তাকে জোর করে ধরে রাখার রুচি বা মন মানসিকতা কোনটায় আমার নেই। তুমি আমার বর্তমান ,অতীত, ভবিষ্যত সবকিছুকে প্রবলভাবে আচ্ছন্ন করে আছো ।তারপরেও যত কষ্টই হোক না কেন আমি কখনোই তোমার ইচ্ছের পথে বাঁধা হব না ।একটা কথা জেনো রেখো, আমার ক্ষমা করা বা না করায় হয়ত তোমার কিছু আসে যায় না তবুও আমি কখনোই তোমাকে ক্ষমা করবনা ।
No comments:
Post a Comment