Wednesday, December 4, 2013

‘অপেক্ষার প্রহর শেষে’ (পঞ্চম এবং শেষপর্ব)

গাছের উপর যখন ঝড়ের আঘাত আসে তখন তার ডালপালা উঁড়িয়ে নিয়ে যায়। একটা সময়ের পর আস্তে আস্তে গাছে নতুন পাতা গজায়। গাছের ডাল-পালা বিস্তৃত হয়। কিন্তু ঝড়ের আঘাত যখন গাছটাকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলে, তখন গাছের মৃত্যু হয়।

রুপমের জীবনে একটার পর একটা ঝড় এসেছে। শেষ ঝড়টা যেন তাকে কুপোকাত করে দিয়ে গেছে। বেঁচে আছে এখনো কিন্তু একে ঠিক বেঁচে থাকা বলেনা। স্বপ্নের মৃত্যু মানে আত্নার মৃত্যু। আত্নার মৃত্যু হলে উপরে খোলসটা রয়ে যায় কিন্তু ভেতরটা কেমন যেন নির্জীব হয়ে পড়ে। কোন ব্যাপারে উৎসাহ কাজ করেনা। সুন্দর গুছানো জীবনটা চোখের পলকে একটু একটু করে ক্ষয়ে যায়। একে ঠিক মৃত্যু বলেনা। তবে এটি মৃত্যুরই আরেকটি রুপ।

‘অপেক্ষার প্রহর শেষে’ (চতুর্থ পর্ব)

কালো দীর্ঘ দেয়ালে যখন সূর্‍্যের আলো পরে হঠাৎ করে তাকে দেখে কালো না মনে হলেও সে কালোই থাকে। সীমানার বাহিরের মানুষ গুলো হয়তো তাদের দুরবর্তী চোখ দিয়ে কাউকে দেখে সুখী ভাবে, অথবা ভাবে সুখ ওই রকম। কিন্তু প্রতিটা অস্তিত্ব একিরকম টানাপোড়নে থাকে। আর সুখ! সে সবার হাতের মুঠোয় আলোর মত লুকোচুরি খেলে। মুঠো খুলে রাখতে হবে যাতে তাতে আলো টুকু পড়ে, বন্ধ করলেই হারিয়ে যাবে। ধরা যাবে না!

‘অপেক্ষার প্রহর শেষে’ (তৃতীয় পর্ব)

হঠাত্‍ করেই হাসিখুশি আনুভার মনটা বিষাদের কালো ছায়ায় ঢেকে গেল। সারাটা দিন চুপিচুপি দরজা বন্ধ করে একা বসে কেঁদেছে, সন্ধ্যা হয়ে আসছে, তার কিছুই ভালো লাগছে না। তার কাছে মনে হচ্ছে সব মিথ্যা, রুপমের মতো হাবাগোবা ছেলে কখনও এরকম হতে পারে না। আবার ভাবে, হাবাগোবা চেহারার মুখোশের আড়ালে হয়ত আসল কালো চেহারাটা লুকিয়ে আছে তাই এমন কাজ করেছে। আনুভা কিছু ভাবতে পারছে না, তার মাথায় কিছুই কাজ করছে না, যতই ভাবছে ততই কান্না পাচ্ছে। হঠাত্‍ করে তার মাথায় আসল, আচ্ছা আমি কাঁদছি কেন? এ প্রশ্নের সঠিক কোন উত্তর পেল না। রূপম তার কে হয়? রূপমের জন্যে সে কাঁদবে কেন? রূপম যা ইচ্ছা করুক তার কি আসে যায়! তবুও সে নিজেকে সান্তনা দিতে পারল না, হু হু করে কাঁদতে লাগল। তার বুকে কোন কিছু হারিয়ে ফেলার তীব্র বেদনা আঘাত করছে, এ যেন প্রিয়জনকে হারিয়ে ফেলার মতো বেদনা।

"অপেক্ষার প্রহর শেষে" (দ্বিতীয় পর্ব)

'তুমি আমার প্রথম সকাল,
সারাটি বিকেল... একাকী দুপুর বেলা...
তুমি আমার সারা দিনময়...'
আজ সারাদিন গুন গুন করে গেয়েই যাচ্ছে আনুভা। যেন অন্য রকম এক ভালো লাগা তাকে সারাক্ষনই ঘিরে রেখেছে। ভেবে পাচ্ছেনা কেন তার এমন
অনুভূতি হচ্ছে। কেন আজ সব কিছুই অসম্ভব ভালো লাগছে !

"অপেক্ষার প্রহর শেষে" (প্রথম পর্ব)

গ্যালারী দৃক। নিজের তোলা আলোকচিত্রের প্রদর্শনীতে ব্যস্ত সময় কাটছে রুপমের। আগত অতিথিদের সাথে কুশল বিনিময়, ছবি সম্পর্কে নানান কথা কথা বলছে সে। এক দন্ড বসার সময় পাচ্ছে না সে। কিন্তু তারপর ও কিছুক্ষণ পরপর গ্যালারীর প্রবেশ পথের দিকে দৃষ্টি বুলিয়ে নিচ্ছে সে। প্রদর্শনীর আজকেই শেষ দিন। তার আশা মেয়েটি আজও আসবে। গত চারদিন ঠিক সন্ধ্যে ৭টায় মেয়েটিকে দেখেছে সে। আধা ঘন্টা ঘুরে ফিরে সব গুলো ছবি দেখে। তার সঙ্গে প্রতিবার কেউ না কেউ একজন থাকে। হয়তো তার কোন বান্ধবী। প্রথম দিন ই তার সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছেটা অনেক কষ্টে দমন করে রুপম। এরপর বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও সাহস করে উঠতে পারে নি। আজ সে ঠিক করেছে যে করেই হোক কথা বলবে। টানা চারদিন মেয়েটি তার ছবি দেখে এসেছে, নিশ্চয় খুব পছন্দ করেছে বলেই।

Wednesday, November 20, 2013

ল্যাম্পপোষ্টের আলোয়


ওকে আমি যখন প্রথম দেখি তখন রাত প্রায় ১২টা ছুঁইছুঁই করছে। বিজয় সরনীর রাস্তার মোড়ে একা দাঁড়িয়ে ছিলো ।ল্যাম্পপোষ্টের হলুদ আলোয় খুব বেশি সাধারন মেয়েই মনে হচ্ছিলো সবকিছুতেই গ্রাম্যতার ছাপ স্পষ্ট। চোখ ফিরিয়ে নিতে নিতেও আটকে গেলো। ছোট্ট নাকটিতে বসে থাকা বিশাল নাকফুলটি কিংবা দুচোখের নিচে লেপ্টে যাওয়া কাজল সবকিছু বদলে দিলো। মনের ভ্রম নাকি হলুদ আলোর মোহ আমি জানিনা কারন একটু পরেই আমি নিজেকে আবিষ্কার করলাম ল্যাম্পপোষ্টের আলোয় ঢাকা এই শহরের পিচঢালা রাস্তায় আমি হাঁটছি, সাথে আছে এক হলুদ পরী। আকাশ থেকে মাটিতে নেমে পথ হারিয়েছে কিছু বলতে পারছে না যাই জিজ্ঞেস করি সে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছে। কান্না থামাতেও বলতে পারছি না

Monday, November 11, 2013

বেচে থাকুক ট্রাফিক জ্যাম(২য় পর্ব)


পরেরদিন অফিস শেষ করে দ্রুত তড়িঘড়ি বাস কাউন্টারে চলে এলাম। যদি তার দেখা পাওয়া যায়। দুই ঘন্টা অপেক্ষা করলাম সেই রোদের মধ্যে, কিন্তু তার দ্যাখা নেই। মনে মনে নিজেকে বকছি, কেন গতকাল অফিস ছুটির টাইমটা জেনে রাখলাম না। শেষে ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে বাসায় ফিরলাম।
বাসায় ফিরে হাজার বার শপথ করার পরও পরদিন আবার আগে আগে বাস কাউন্টারে চলে এলাম। আজকে ভাগ্য সুপ্রসন্ন। দেখি সে আসছে। আমি ডাকব ডাকব করতেই সে-ই আমাকে দেখে ফেলল।
- কি খবর, ভালো আছেন?

বেচে থাকুক ট্রাফিক জ্যাম(১ম পর্ব)


‘জ্যামে পড়লে মানুষ কেন যে বিরক্ত হয়। আমার কিন্ত ভালই লাগে।’
কথা শুনে রাগে পিত্তি জ্বলে গেল আমার। বক্তা আমার পাশের সীটের ভদ্রলোক। এপ্রিলের প্রচন্ড গরমে ট্রাফিক জ্যামে আটকে আছি। বাসে চড়েছি মিরপুর থেকে যাব মতিঝিলে।এখন আছি ফার্মগেটে।এতটুকু আসতেই প্রায় ৪৫ মিনিট পার হয়ে গেছে। এখানে আটকে আছি মনে হচ্ছে ঘন্টা খানেক। আসলে ৫ মিনিট ও হয়নি। গরমে পুরো শরীর ঘেমে গেছে এবং নানান বিশ্রী জায়গায় চুলকাচ্ছে। কিন্ত চুলকাতে পারছিনা। কারণ এই ব্যাটা ভালোই মোটা। নিজেরটা ছাড়াও আমার সীটেরও খানিকটা দখল করে ফেলেছে।এর মধ্যে এই কথা শুনলে কার ভাল লাগে?
মনে মনে বললাম, ‘ ব্যাটা তোর ভাল লাগে, তুই সারা জীবন জ্যামে বসে থাক, আমি থাকতে পারব না,আমার ভাল লাগেনা।’

Tuesday, October 8, 2013

সেই মুখ


শাফায়াত হাতের ঘড়িটা দেখল। কাঁটাটা ঝাপসা; তবে সময়টা আন্দাজ সাড়ে সাতটা হবে। চশমা পরার প্রয়োজন মনে করলো না। তার কাছে রুগীই আসেনা যে রুগী দেখার জন্য চশমা পরতে হবে। চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে হাতের কাছের সুইচ বন্ধ করে দিল। ঘরের সিএফএল লাইটটা বন্ধ হয়ে গেল; কিন্তু ডিম লাইটটা ঘোলা লাল একটা আভা তৈরী করল। এই আলো-আঁধারী পরিবেশ যে শাফায়াতের খুব প্রিয় তা না। তার ভাল লাগে ঘুটঘুটে অন্ধকার; কারন সেই অন্ধকারে কেউ তাকে দেখতে পায়না। এই ফালতু রোম্যান্টিক আবছা টিমটিমে আলো দিয়ে রাখা লাগে জাহিদের জন্য। জাহিদ ক্লিনিকের বয়ের কাজ করে; কোন পেশেন্টের ল্যাব টেস্টের রেজাল্টের দরকার হলে শাফায়াতের কাছে আসে। এই সামান্য কাজটা করতে গিয়ে ঘুটঘুটে অন্ধকারে কয়েকবার জাহিদ উষ্টা খেয়েছে; সেই থেকে টিমটিমে আলোর ব্যাবস্থা।

Monday, October 7, 2013

একজোড়া আবেগের গল্প

**
প্রথম দৃশ্য ঃ
ছেলেটা হাউমাউ করে কাঁদছে। অথচ কোন শব্দ আসছে না, দু’হাতে যে মুখ চেপে ধরা। শব্দ আসবে কিভাবে? সমস্ত শরীরে ছোপ ছোপ রক্ত। কিছু রক্ত ভেসে যাচ্ছে উষ্ণ কান্নাজলে। ১৬ বছরের চঞ্চল ছেলেটা কান্না থামিয়ে দিচ্ছে আস্তে আস্তে। সেই সাথে বাড়ছে মেঝেতে রক্তের প্রবাহধারা। সামনের মৃদু আলো নিভে যাচ্ছে একটু একটু করে, অনেক। তারপর - - - - তারপর কেবল শরীরজুড়ে শীতল নিথরতা। বাহিরে হঠাৎ মেঘ ডেকে উঠল অপরিচিত গর্জনে।

বাস্তব ভালবাসা

 

শাহাদত বিশাল এক ফ্ল্যাট বাড়ির সামনে খাম্বার মত দাঁড়িয়ে আছে।অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার কারনে নিজেকে সবসময় খাম্বা খাম্বা মনে হয় তার।খাম্বা হতে ভাল লাগছে না এখন তার কারন পিচ ঢালা রাস্তায় যে রোদ পড়েছে তাতে খাম্বাবেশী শাহাদত কেন রাস্তার পিচ পর্যন্ত গলে যাচ্ছে।এই রোদকে পিচ গলানো রোদ বলে আর সেখানে শাহাদতের খাম্বা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার ইচ্ছে ভুলেও আসার কথা না মাথায়।সে ইচ্ছে করলে বাড়িটার ভেতর ঢুকতে পারে অনায়াসে।গেটে দাঁড়ানো দারোয়ান মোটা গোফওয়ালা রমিজ মিয়া তাকে কিছুই বলবে না কারন সে এই বিরাট বাড়ির কেয়ারটেকার।কিন্তু সে যাবে না তার ছোট্ট রুমে।সে কারো জন্য অপেক্ষা করছে।সে নীচে নামবে আর সে হাসিমুখে বলবে,শাহাদত ভাই একটা রিক্সা ডেকে দেন না ।তারপর হয়তোবা মধুর কিছু বকা দিবে।বকাগুলো শাহাদতের কাছে সবসময় মধুর মনে হয়।শাহাদত এই ডাকটা আর বকাটা শোনার জন্য দেড় ঘন্টা যাবত দাঁড়িয়ে আছে।ভেতরে লিফটের দিকে সে বার বার তাকাচ্ছে। নাহ লিফট তো আট তলায় যাচ্ছে না।বড্ড অস্থির লাগছে শাহাদতের তবে কি আজ নুহা যাবে না ভার্সিটিতে?ঐ যে নামছে লিফট এটা নিশ্চয়ই নুহা।শাহাদত রিক্সার দিকে হাক দিল,

Sunday, October 6, 2013

এক ঠোঙ্গা বাদাম ও একটি হলেও হতে পারত ব্রেকআপ


রুবাই বাদাম চিবুচ্ছে। ঘনঘন এবং খুব দ্রুত। চোখের পলক পড়ার আগেই বাদাম ঠোঙ্গা থেকে বের হচ্ছে,খোসামুক্ত হচ্ছে তারপর মুখে চালান হয়ে যাচ্ছে। হাত,মুখ, এবং চোখ- কোনটাই বিশ্রাম পাচ্ছেনা এক মূহুর্ত। লম্বা সরু আঙ্গুলগুলো বাদামের খোসা ছাড়াতে ব্যস্ত, মুখ ব্যস্ত তা চিবোতে। আর চোখজোড়া ক্ষণে ক্ষণে আরও লাল হচ্ছে,আরো লাল হচ্ছে। এটা রুবাইর রাগের বহিঃপ্রকাশ। তার ঢাউস হ্যান্ডব্যাগে অন্যান্য জরুরী জিনিসপত্রের সাথে এক ঠোঙ্গা বাদাম থাকবেই সবসময়। কারণ, রাগ হলে বাদাম চিবুনো চাই ই তার। নইলে অন্য কারো মাথা বাদামের খোসার মত ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অন্য কারো বলতে যার উপর তার রাগ হয় ,তার।

Saturday, October 5, 2013

রোজ সকালে পড়ছে মনে এ কথাটা কেমনে বলি।









চিলতে রোদে পাখনা ডোবায়
মুচকি হাসে শহরতলী
রোজ সকালে পড়ছে মনে
কথাটা কেমনে বলি

Thursday, October 3, 2013

আমি তোমার জন্য লিখি


প্রিয় ঈশিতা, “আমি যে তোমার জন্যই শুধু লিখি আর আকি এটা কি তুমি জানো?” আমি যখন ওর মায়াবী চোখের দিকে তাকিয়ে এই কথাগুলো বললাম তখন ওর জ্বলজ্বলে চোখ আমাকে অন্ধ মোহে আকড়ে ধরে রেখেছিলো।আমি বহু চেষ্টা করেও তার ওই আবদ্ধ ভালোবাসা থেকে বের হতে পারছিলাম না।কিন্তু আমি জানি আমাকে বের হয়ে যেতে হবে।কারণ ঈশিতা আমার না।কখনো আমার ছিলোনা, আমি বুঝতে পারিনি শুধু।পাঠক, কি করে বুঝবো বলুন তো?জ্ঞান হবার পর থেকে যাকে অন্ধের মত ভালোবেসেছি, যার সাথে সকাল বিকাল সন্ধ্যা দুকাপ চা আর এক বাটি মুড়ির আশ্রয়ে কাটিয়ে দিয়েছি, সে যে আমার নয় তা কি করে আমি বুঝবো?আমি সেদিনও বুঝনি যেদিন ওর মুখে আমি অন্য কারো নাম শুনেছিলাম, আজো বুঝিনা।

চিঠি


চিঠিটা তোমাকে দেয়ার ব্যাপারে এতদিন মনের সাথে অনেক বোঝাপড়া করেছি।একবার মনে হয়েছে চিঠি একথাগুলো তোমার জানা দরকার। আবার এটাও মনে হয়েছে আমি যে আবেগ , যে ভালবাসা নিয়ে একথা গুলো লিখছি তুমি কি সেইরকম আবেগ কিংবা ভালবাসা দিয়ে আমার কথাগুলোর মূল্যায়ন করবে?কিন্তু চিঠিটা তোমাকে লেখার ব্যাপারে যত যুক্তিই দাঁড় করাই না কেন,আমার আবেগের কাছে সব যুক্তিই হাওয়া।আমি তোমাকে অনেকগুলো কথা জানাবো বলেই লিখছি।

হয়ত আর লেখা হবে না।ইচ্ছে হলেও লিখব না।মনকে এতদিন সেভাবে তৈরী করেই লিখতে বসেছি।আমি কখনো কাউকে ভালবাসবো ভাবি নি।কিন্তু কখন কিভাবে যে তুমি আমার পুরো মন দখল করে ফেলেছো টেরই পাই নি।তখন মনে হত ভালবাসা ছাড়া বুঝি জীবনের কোন আনন্দই নেই।আমি খুব সাধারন ছেলে হলেও সাধারন কোন কিছুই আমার পছন্দ নয়।আমার এই চরিত্রের জন্য কখনো আনন্দ আবার কখনো কষ্ট পাই।

রূপার রূপ


-এই তুমি আমাকে রূপা ডাক কেন? আমার নাম তো রূপা না!
-ঐ নামে ডাকলে তুমি রাগ কর?
-রাগ করব কেন? আমিও তো তোমাকে জান বলে ডাকি। এমনি জানতে চাইলাম।
-আমার ভাল লাগে। তাছাড়া ঐ নামটা আমার কাছে অনেক দামী।তোমাকে খুব মানায়।
-রূপার চেয়ে সোনা তো আরো বেশী দামী।
-হ্যা তা ঠিক। যেকোন জিনিষের স্বার্থকতা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিতে।তুমি যেভাবে দেখছ তাতে সোনা অনেক দামি। কারো খারাপ দৃষ্টি থাকলে এই শব্দটা একটা গালি।
-হয়েছে হয়েছে আর জ্ঞান দিতে হবে না…
-আমি জ্ঞান দিচ্ছি না। কাউকে জ্ঞান দেবার ক্ষমতা আমার নেই। আমি শুধু তোমাকে রূপা নামে ডাকার কারণটা বলছি।
-আচ্ছা শুনি তাহলে তোমার রূপা রহস্য!

নূপুর বাজে , মনের কোণে


ঝুম বৃষ্টিতে ধুয়ে যাচ্ছে ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের সামনের সবুজে মোড়ানো মাঠটা । বৃষ্টিটা উপেক্ষা করেই মাঠের পাশের রাস্তাটা দিয়ে দ্রুত গতিতে সাইকেল ছুটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে একটি ছেলে । ছেলেটার নাম অভিক । এই কলেজেরই ইন্টারমিডিয়েট সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ।

বৃষ্টির পানিতে ঝাপসা হয়ে যাওয়া চারপাশের পরিবেশটা দেখতে দেখতে সাবধানী গতিতেই এগিয়ে যাচ্ছিলো অভিক । কিন্তু , সমস্যাটা তৈরি হল আরেকটু সামনে এগোতেই । হঠাৎ করে রাস্তা পার হতে যাওয়া একটা মেয়ে অভিকের সাইকেলের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে যায় । সাইকেলটা কোনরকমে নিয়ন্ত্রণ করে দাঁড়িয়ে যায় অভিক । একটু ভীতু টাইপের ছেলেরা যা করে , অভিকও ঠিক সেই কাজটাই করলো । চারপাশের পরিবেশটা ভালো করে দেখে নিলো ।

নৈশব্দে

প্রায় সাড়ে তিন বছর পর আবার সেই রেস্টুরেন্টটায় আসল নুশেরা। অনেক বদলে গিয়েছে সব,টেবিল আরো বেড়েছে,জায়গাও বেড়েছে অনেকখানি। দেয়ালের রংটাও নতুন করা হয়েছে বোধহয়,পুরোটাই নতুনের মত। সেই বৃষ্টির বিকেলের পর আর এখানে আসা হয়নি নুশেরার। কোনের সেই টেবিলটায়ও বসা হয়নি অনেকদিন। এখনো আছে টেবিলটা,শুধু চাদরটা লাল থেকে নীল হয়েছে,চেয়ারদুটোও এখনো মুখোমুখিই। বদলায়নি ম্যানেজারও,বুড়িয়ে গেছেন কিছুটা। এতদিন পরেও ভুল হয়নি তার,নুশেরা ঢুকতেই সেই চেনা হাসি মুখেই জিজ্ঞাসা করে সে,এতদিন পর আসলেন আপা?ভাই আসবে নাকি?